March 15, 2025, 2:49 am
স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি। নিশ্চিয় বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি। তারপরও যে অপবাদ দিয়েছে, তার প্রতিবাদ করে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পেরেছি। এটাই হলো সবচেয়ে বড় কথা। সেই শক্তিটা কিন্তু আপনারা যুগিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেছেন, যারা চাইনি আওয়ামী লীগ কোন দিন ক্ষমতায় আসুক, এদেশের মানুষ আবার পেট ভরে ভাত খাক, মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই হোক। রোগে চিকিৎসা পাক, শিক্ষা পাক, তাদের প্রতি আমাদের চ্যালেঞ্জ। এই দেশ আমার বাবা স্বাধীন করেছেন। আমার বাবা যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, সেটা আমি করবো। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা এটাইতো আমাদের লক্ষ্য। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো পদ্মা সেতু। মিথ্যা অপবাদ দিতে চেয়েছিলো। নিজের ভাগ্য তো গড়তে আসিনি। নিশ্চিয় বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি। তারপরও যে অপবাদ দিয়েছে, তার প্রতিবাদ করে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পেরেছি। এটাই হলো সবচেয়ে বড় কথা। সেই শক্তিটা কিন্তু আপনারা যুগিয়েছেন।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নেতাকর্মীদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আজকে সারা বিশ্বে উজ্জ্বল করতে পেরেছি। যারা বাংলাদেশের কোন ভালই দেখে না চোখে। যারা দেখে না চোখে, চোখ থাকতে যারা অন্ধ তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার নাই। তারা দেখে না, কিন্তু ভোগ করে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, আজকে সবার হাতে মোবাইল ফোন, অনলাইন। সবাই সারা দিন কথা বলে। এতোগুলো টেলিভিশন দিয়ে দিয়েছি। সারাদিন কথাবার্তা বলে তারপর যদি বলে কিছুই বলতে পারি না, এ কথা বলার অধিকার নেই। সবই বলেই তারপরেও বলে কথা বলার অধিকার নাই। এদের ব্যাপারে করুণা করা ছাড়া আর কিছুই নাই। আমরা তাদের করুণাই করি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আজকে সারা বিশ্বে উজ্জ্বল করতে পেরেছি। যারা বাংলাদেশের কোন ভালই দেখে না চোখে। যারা দেখে না চোখে, চোখ থাকতে যারা অন্ধ তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার নাই। তারা দেখে না,কিন্তু ভোগ করে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, আজকে সবার হাতে মোবাইল ফোন, অনলাইন। সবাই সারা দিন কথা বলে।এতোগুলো টেলিভিশন দিয়ে দিয়েছি। সারাদিন কথাবার্তা বলে তারপর যদি বলে কিছুই বলতে পারি না, কথা বলার অধিকার নাই। সব বলেই বলে কথা বলার অধিকার নাই। এদের ব্যাপারে করুণা করা ছাড়া আর কিছুই নাই। আমরা তাদের করুণাই করি।
ফসল ফলানো নিয়ে শেখ হাসনা বলেন, আমাদের ফসল আমাদেরই ফলাতে হবে। আমাদের খাদ্য চাহিদা আমরা পূরণ করবো। আর যা উদ্বৃত্ত থাকে তা বরং অন্যদের দিতে পারবো। সেটাই আমরা করবো। খাদ্য সংরক্ষণের আমরা ব্যবস্থা করছি। আমরা প্রত্যেক এলাকায় এলাকায় খাদ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিবো। যা যা সহযোগিতা করার আমরা করবো।
দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা দেশটা স্বাধীন করে গেছেন। তাঁর স্বপ্ন পূরণ করে ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়া আমার লক্ষ্য। আজকে হতদরিদ্র মাত্র ৫ ভাগ, সেটাও যেন না থাকে, তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। একজনও হতদরিদ্র বলে কেউ থাকবে না। প্রত্যেকেরই একটি ঘর, জমি আর জীবন জীবিকার ব্যবস্থা ইনশাল্লাহ আমরা করতে পারবো।
স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, কমিউনিটি ক্লিণিক থেকে ওষুধ দিচ্ছি। শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। স্কুলগুলোকে আমরা নতুন ভাবে তৈরী করে দিচ্ছি। পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছি, বৃত্তি দিচ্ছি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে আমরা বৃত্তি দিবো। বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা, দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিভিন্ন সামাজিক কায্যক্রমের মাধ্যমে আমরা মানুষকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
কোটালীপাড়াবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আপনারাই আমার সব দায়িত্ব নিয়েছেন।আমার নির্বাচন আমার সব কিছুই আপনারা দেখেন। আমার টুঙ্গিপাড়া কোটালীপাড়ার মানুষ গুলোই তো আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। যারা আমাদের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান সম্প্রদায় যার যার ধর্মীয়ভাবে আপনারা সৃষ্টির কর্তার কাছে কামনা করবেন এই বাংলাদেশ লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশের সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে আমরা চলবো। বাংলাদেশের মানুষ ময্যাদা নিয়ে চলবে। সেটাই আমরা চাই।
এসময় আওয়ামী লীগ সভাপতিকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণের পর গত এক বছরে তারা যে সুবিধা পেয়েছেন তা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে স্বপ্নের এই সেতু নির্মাণে সাহসী ভূমিকার জন্য অভিনন্দন জানান। এসময় কোটালীপাড়ার নেতাবৃন্দ বলেন, এলাকার জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিতে মুখিয়ে আছে। নির্বাচন বিরোধী সব অপতৎপরত নস্যাৎ করতেও তারা প্রস্তুত বলেও জানান কোটালিপাড়াবাসী।
এর আগে নেতাকর্মীদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনাসভায় অংশ নিতে দুই দিনের সফরে শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় সড়ক পথে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। কোটালীপাড়ায় পৌঁছানোর পর নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ও বিভিন্ন শ্লোগান দেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় হাত নেড়ে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান।
কোটালীপাড়া পৌঁছে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে স্থানীয় সিনিয়র নেতাকর্মীদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে সেখানে আয়োজতি মত বিনিময় সভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সভার শুরুতে দলীয় প্রধানের নির্দেশে কোটালিপাড়ার ১২টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নতুন ভবনের ফলক উম্নোচন করেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় কার্যালয় ভবনের সামনে একটি আম, একটি নিম ও একটি বকুল গাছের চারা রোপণ করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সাথে মত বিনিময় সভায় অংশ নেন। সভা শেষে সেখানে নেতা-কর্মীদের সাথে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় আওয়ামী লীগের তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মদ, প্রেসিডিয়াম মেম্বার শাজাহান খান, এমপি, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল, শেখ হেলাল উদ্দিন, এমপি, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, এমপি, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খন্দকার, কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, আওয়ামী লীগ নেতা এস এম হুমায়ূন কবীর, মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোটালীপাড়া পৌরসভার মেয়র ,মতিয়ার রহমান হাজরা, কামাল হোসেন শেখ, জেলা পরিষদ সদস্য কামরুল ইসলাম বাদল প্রমূখ।
কোটালীপাড়ার কর্মসূচী শেষ করে দুপুরে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দোয়া মোনাজাতে অংশ নেন। এরপর তিনি নিজ বাসভবনে অবস্থান নেন ও রাত্রী যাপন করেন।
রোববার (০২ জুলাই) টুঙ্গিপাড়ায় জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ঢাকা উদ্দেশ্যে রওনা দিকেন প্রধানমন্ত্রী।
ঘরের মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। এক নজর দেখার জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর এ সফর নেতাকর্মীদের মাঝে ঈদের আনন্দকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে শোভাবর্ধন। সড়কের মোড়ে মোড়ে টাঙ্গানো হয়েছে নানা ধরনের ব্যানার, ফেষ্টুন ও বিলবোর্ড। শুভেচ্ছা জানিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে তোরন। নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। #